ViralNews24

ViralNews24

ছাত্রদল নেত্রী ইপ্সিতাকে হত্যা করল কে?

ভোলা সরকারি কলেজের ছাত্রদল নেত্রী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত ১৭ জুন লঞ্চযোগে ঢাকায় যাওয়ার পথে ইপ্সিতা লঞ্চের তৃতীয় তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এর ৪ দিন পর ২০ জুন লক্ষ্মীপুরসংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ইপ্সিতার পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, ইপ্সিতা লঞ্চে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

পরে তাকে লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ইপ্সিতাকে এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী সমর্থকরা সরাসরি হুমকি প্রদান করেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। সোমবার এ অভিযোগ তুলে এক বিবৃতিতে ছাত্রদল জানায়, ইপ্সিতার মৃত্যুর পরেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের উল্লাস লক্ষণীয়। সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এই হত্যাকাণ্ডের অন্তরালের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ছাত্রদল নেত্রী ইপ্সিতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে। একই েসঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার উন্মোচন ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল।

ইস্পিতার বাবা জানান, তার মেয়ে বাড়ি থেকে টিউশনি করতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়।

এরপর লঞ্চে এক তরুণীর নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার খবর পেয়ে তিনি কর্ণফুলী লঞ্চের ভোলা অফিসে যান। সেখানে ছবির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়, ঝাঁপ দেওয়া তরুণীই তার মেয়ে। তিনি বলেন, মেয়েটি ‘জসিম’ নামে এক ব্যক্তির নামে বুকিং দেওয়া কেবিনে উঠেছিল। ভাড়া চাইলে সে জানায়, বুকিং দেওয়া ব্যক্তি পরিশোধ করবে। এরপর মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে উত্তেজিতভাবে কথা বলার পরই সে নদীতে ঝাঁপ দেয়।

মাসুদ রানা অভিযোগ করেন, ‘আমার মেয়ে কেন ঢাকাগামী লঞ্চে উঠল, তা তদন্তে বের করা দরকার। প্রশাসন মোবাইল ট্র্যাকিং ও কললিস্ট বিশ্লেষণ করলেই বিস্তারিত জানা যাবে। কেউ তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে থাকলে, বা হত্যা করে থাকলে তার বিচার চাই।’

কর্ণফুলী-৪ লঞ্চের সুপারভাইজার নান্টু বাবু জানান, ইলিশা ঘাট ছাড়ার পর কালিগঞ্জ অতিক্রম করে কিছু দূর গেলে খবর আসে এক তরুণী তৃতীয় তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন। লঞ্চ ফিরে গিয়ে উদ্ধারচেষ্টা চালায়। একবার তরুণীকে নদীতে ভাসতে দেখা গেলেও কাছে যাওয়ার আগেই সে চোখের আড়াল হয়ে যায়। কোস্টগার্ডকে জানিয়ে লঞ্চ আবার ঢাকার পথে রওনা দেয়।

ব্রাদার্স নেভিগেশন কম্পানির ব্যবস্থাপক আলাউদ্দিন জানান, ঘটনার পর লঞ্চে থাকা অন্য এক নারী ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে মুন্সিগঞ্জে লঞ্চটি পৌঁছালে পুলিশ দুইজন স্টাফ ও অভিযোগকারী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। প্রাথমিকভাবে তাদের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরী ঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আজিজুল হক জানান, উদ্ধারের সময় মরদেহে কালচে দাগ ছিল। নিহতের বাবা বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *