ViralNews24

ViralNews24

সান্ডা কী, এটি কি খাওয়া যায়? বিস্তারিত জানুন ইসলামিক দৃষ্টিকোণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতাসহ

সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে নামটি ঘুরে ফিরে আসছে, সেটি হলো সান্ডা। অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন—এটি আসলে কী? এটি কি খাওয়া যায়? এর ধর্মীয় অবস্থান ও স্বাস্থ্য উপকারিতা কী? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতেই আজকের এই বিস্তারিত প্রতিবেদন। মরু অঞ্চলের এই বিশেষ প্রাণী নিয়ে ইসলামিক আলোচনা, লোকজ চিকিৎসা, এবং পুষ্টিগুণসহ আমরা আপনাকে জানাবো প্রয়োজনীয় সবকিছু।

সান্ডা কী এবং এটি কোথায় পাওয়া যায়?

সান্ডা হলো Uromastyx গণভুক্ত একটি টিকটিকি জাতীয় সরীসৃপ, যা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলে দেখা যায়। এটি দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো হলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। এর মোটা, শক্তিশালী লেজে কাঁটার মতো খাঁজ থাকে যা আত্মরক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত এরা পাহাড়ি ও পাথুরে এলাকায় বসবাস করে এবং তৃণভোজী হলেও খাদ্য সংকটে পোকামাকড়ও খায়।

সান্ডা কি খাওয়া যায়? ইসলামিক দৃষ্টিকোণ
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সান্ডা খাওয়া নিয়ে ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। হাদিস অনুযায়ী, রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে সান্ডা খাননি, কিন্তু সাহাবি খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) তা খেয়েছিলেন। শাফেয়ী, মালিকি ও হাম্বলি মাজহাবে এটি হালাল ধরা হলেও, হানাফি মাজহাবে এটি মাকরুহ। অর্থাৎ এটি খাওয়া উত্তম নয়, তবে হারাম নয়। এটি একটি ঐচ্ছিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে ধর্মীয়ভাবে।

সান্ডা বনাম গুইসাপ: পার্থক্য কোথায়?
অনেকেই ভুলবশত সান্ডাকে বাংলাদেশের গুইসাপের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলেন। তবে গুইসাপ একটি মাংসাশী, বিষাক্ত উভচর প্রাণী যা ইসলামে হারাম। অন্যদিকে, সান্ডা নিরামিষভোজী এবং বিষাক্ত নয়। তাই সান্ডা হালাল হতে পারে, গুইসাপ নয়।

সান্ডা তেল এবং এর লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহার
সান্ডা তেল প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক এবং লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে এটি যৌন দুর্বলতা, গিটের ব্যথা, প্রদাহ, এবং ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়নি। তাই ব্যবহার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যেহেতু এটি একটি প্রাণী, সঠিকভাবে জবাই করাই ইসলামে গ্রহণযোগ্যতার প্রধান শর্ত। আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করা হলে, সান্ডা খাওয়া হালাল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সান্ডা কী ধরনের প্রাণী?
সান্ডা একটি টিকটিকি জাতীয় সরীসৃপ যা মরুভূমি অঞ্চলে বসবাস করে। এটি সাধারণত নিরামিষভোজী এবং আত্মরক্ষায় লেজ ব্যবহার করে।

সান্ডা খাওয়া কি হালাল?
হানাফি মাজহাবে এটি মাকরুহ, কিন্তু শাফেয়ী, মালিকি ও হাম্বলি মাজহাবে এটি হালাল। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে না খেলেও হারাম ঘোষণা করেননি।

সান্ডা এবং গুইসাপ কি এক প্রাণী?
না, গুইসাপ হলো মাংসাশী এবং বিষাক্ত, যা ইসলামে হারাম। সান্ডা নিরামিষভোজী এবং বিষাক্ত নয়, তাই তা খাওয়া হালাল হতে পারে।

সান্ডা তেলের ব্যবহার কী কী?
সান্ডা তেল যৌন দুর্বলতা, গিটে ব্যথা, ত্বকের সমস্যা ও প্রদাহ নিরাময়ে লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

সান্ডা কোথায় পাওয়া যায়?
আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলে সান্ডা বেশি দেখা যায়। এটি পাহাড়ি ও পাথুরে এলাকায় বাস করে।

সান্ডা খাওয়া কি স্বাস্থ্যসম্মত?
সান্ডা প্রোটিনসমৃদ্ধ ও কম চর্বিযুক্ত হওয়ায় এটি স্বাস্থ্যসম্মত হতে পারে, তবে সঠিকভাবে রান্না করা জরুরি।

সান্ডা সম্পর্কে এই বিস্তারিত আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে এটি একটি ধর্মীয়, পুষ্টিকর এবং ভিন্নধর্মী খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে খাওয়ার আগে সঠিক প্রস্তুতি ও ধর্মীয় নির্দেশনা মানা জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *