গর্ভাবস্থায় সহবাস করা সাধারণত নিরাপদ, বিশেষত যখন গর্ভাবস্থা সুস্থ এবং জটিলতা-মুক্ত থাকে। সহবাসের সময় কিছু সাধারণ নিয়ম এবং সতর্কতা মেনে চললে মা এবং শিশু উভয়েই সুস্থ থাকেন। এখানে কিছু উপকারিতা এবং নিয়ম রয়েছে:
গর্ভাবস্থায় সহবাসের উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় সহবাসের কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। এই সময় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, যা শরীরকে সক্রিয় ও সতেজ রাখে। পাশাপাশি, সহবাসে এন্ডরফিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা মায়ের মানসিক প্রশান্তি আনে। এছাড়াও, এটি সম্পর্কের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
নারী উপরে অবস্থান: এতে মা নিয়ন্ত্রণে থাকেন এবং পেটে চাপ পড়ে না।
পাশে কাত হয়ে শোয়া: এক পাশে কাত হয়ে শুয়ে সহবাস করলে পেটের উপর কোন চাপ পড়ে না।
হাঁটু ও হাতে ভর দিয়ে: এতে পেটে চাপ না পড়ে সহজেই সহবাস করা যায়।
দাঁড়িয়ে সহবাস: চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে সহবাস করলে পেটে চাপ না পড়ে।
রক্তসঞ্চালন বাড়ে: গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে বেশি রক্ত প্রবাহ থাকে, ফলে এই সময় সহবাস করলে সহজেই রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।
মুড ভালো থাকে: সহবাসের সময় উৎপন্ন হওয়া এন্ডরফিন মা এবং শিশুকে খুশি রাখতে সাহায্য করে।
ইমিউনিটি বুস্ট: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যৌন মিলন শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় সহবাসের নিয়ম
সহজ ও আরামদায়ক পজিশন নির্বাচন: যেসব পজিশনে পেটে চাপ পড়ে না, যেমন পাশে শোয়া বা হাঁটু ও হাতে ভর দিয়ে সহবাস।
পেটের উপর চাপ এড়ানো: নারী যেন উপরের অবস্থানে থাকে এবং পুরুষের অবস্থান নিচে থাকে, এতে করে পেটে চাপ পড়ে না।
অস্বস্তি বোধ করলে বিরতি: সহবাসের সময় যদি ব্যথা বা অস্বস্তি হয়, তবে তৎক্ষণাৎ বিরতি নেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থার বিভিন্ন ধাপে কিছু সতর্কতা মেনে চলা আবশ্যক:
গর্ভাবস্থার শুরুতে বা শেষের দিকে রক্তপাত বা পেটে ব্যথা হলে সহবাস এড়িয়ে চলা উচিত।
গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা নিচে থাকলে সহবাস থেকে বিরত থাকা ভালো।
কখন সহবাস এড়িয়ে চলা উচিত
যখন গর্ভাবস্থার শুরু বা শেষ পর্যায়ে রক্তপাত হয় বা পেটে ব্যথা অনুভূত হয়, তখন সহবাস এড়িয়ে চলা উচিত। যাদের গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা নিচের দিকে থাকে, তাদের জন্য সহবাস বিপজ্জনক হতে পারে। ডাক্তার যদি গর্ভাবস্থার কোনও পর্যায়ে বিশেষ সতর্কতা নিতে বলেন, তাহলে অবশ্যই তা অনুসরণ করা উচিত।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে গর্ভাবস্থায় সহবাস
ইসলামে গর্ভাবস্থায় সহবাস নিয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে কয়েকটি সময় যেমন মাসিক ও রোজার সময় সহবাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
গর্ভাবস্থায় সঠিক অবস্থান ও নিয়ম মেনে সহবাস করলে কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তবুও, প্রতিটি গর্ভাবস্থা আলাদা, তাই সবসময় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও স্বাচ্ছন্দ্যের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সর্বোপরি, গর্ভাবস্থায় সহবাসের আগে এবং পরে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ গর্ভাবস্থার ধাপ এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন নিয়ম পরিবর্তিত হতে পারে।
Leave a Reply