ViralNews24

ViralNews24

হাদিসের আলোকে যেভাবে সূর্যোদয়ের স্থান পরিবর্তন হতে পারে

জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ও ধর্মীয় সূত্রগুলো বলছে, কিয়ামতের আগে অবশ্যই সূর্য পশ্চিম আকাশে উদিত হবে, ইসলামের দৃষ্টিতে যাকে কিয়ামতের বড় আলামত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন নবী (সা.) বলেন, তোমরা কি জান, এ সূর্য কোথায় যায়? সহাবাগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভালো জানেন।

তিনি বললেন, এ সূর্য চলতে থাকে এবং (আল্লাহ তাআলার) আরশের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত হয়ে পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয়, ওঠো এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও! অনন্তর সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল দিয়েই উদিত হয়। তা আবার চলতে থাকে এবং আরশের নীচে অবস্থিত তার অবস্থান স্থলে যায়। সেখানে সে সিজদাবনত অবস্থায় পড়ে থাকে। শেষে যখন তাকে বলা হয় ওঠো এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখানে ফিরে যাও। তখন সে ফিরে আসে এবং নির্ধারিত উদয়স্থল হয়েই সে উদিত হয়। এমনিভাবে চলতে থাকবে; মানুষ তার থেকে অস্বাভাবিক কিছু হতে দেখবে না। শেষে একদিন সূর্য যথারীতি আরশের নীচে তার অবস্থানে যাবে। তাকে বলা হবে, ওঠো এবং অস্তাচল থেকে উদিত হও। অনন্তর সেদিন সূর্য পশ্চিমাকাশে উদিত হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, (কোরআনের বাণী) ‘কোনো দিন সে অবস্থা হবে তোমরা জান? সেদিন ওই ব্যক্তির ঈমান কোনো কাজে আসবে না, যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি।’ (সুরা আল-আনআম, আয়াত : ১৫৮)। (মুসলিম, হাদিস : ২৮৯)

এ হাদিসটির মর্ম সাধারণ মানুষের কাছে জটিল মনে হলেও অনেক বিজ্ঞানবিদরা দাবি করেছে, পৃথিবী এই প্রক্রিয়ার দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পৃথিবী একটি বিশাল চুম্বকক্ষেত্র নিয়ে ঘুরছে, যার চৌম্বক মেরু উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থান করে। কিন্তু অনেকেই বলছেন যে এই চৌম্বক মেরু উল্টে যেতে পারে। অনেকের দাবি ইতিমধ্যে মেরু ওল্টানোর এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যদি সত্যিই তা ঘটে, তাহলে সূর্য পূর্ব আকাশে উদিত না হয়ে পশ্চিম আকাশে উদিত হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসছে বলা যায়।

বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে পৃথিবীর চুম্বক মেরু প্রায় প্রতি কয়েক লাখ বছরে একবার উল্টে যায়। সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছিল প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার বছর আগে, যা ‘ব্রুনস-মাতুয়ামা’ নামে পরিচিত। এখন আবার মেরু ওল্টানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু পরিবর্তন হতে পারে, তবে সেগুলো সব সময় বিপর্যয়ের কারণ হবে না। মেরু উল্টে যাওয়ার সময় চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হতে পারে। এটা আমাদের সূর্যের ক্ষতিকারক বিকিরণ (সোলার রেডিয়েশন) এবং মহাজাগতিক রশ্মি অনেক শক্তিশালী হয়ে পৃথিবীতে আঘাত করবে। তবে এতে বড় কোনো বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই।

হাদিসের ভাষ্যমতেও বোঝা যায়, সূর্য পশ্চিম আকাশে উদিত হওয়া কিয়ামতের বড় আলামত হলেও এতে তাত্ক্ষণিক পৃথিবী ধ্বংস হবে না। এজন্য বলা হয়েছে, এই ঘটনার পর নতুন করে ঈমান গ্রহণযোগ্য হবে না, তাওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়ের পূর্ব পর্যন্ত কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না। লোকেরা যখন তা দেখবে, তখন পৃথিবীর সকলে ঈমান আনবে এবং সেটি হচ্ছে এমন সময় ‘আগে ঈমান আনেনি এমন ব্যক্তির ঈমান তার কাজে আসবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৬৩৫)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের চির সত্য বাণীগুলো বোঝার তাওফিক দান করুন। পরিপূর্ণ ঈমান দান করুন। মৃ্ত্যুকালেও ঈমান নসিব করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *