প্রথমত, ধরে নিই আমরা হিরোশিমার লিটল বয় পারমাণবিক বোমার কথা বলছি। লিটল বয় লেভেলের বিস্ফোরণের সময় আপনি যদি মোটামুটি ৫০০ মিটার সীমার মধ্যে থাকেন, তবে আপনার দেহ ০.৫ সেকেন্ডে ভ্যাপোরাইজড হয়ে যাবে। অর্থাৎ পুড়ে ভ্যানিশ হয়ে যাবেন আপনি।
এখানে রয়েছে দুটো অনুভূতি। দেহ পোড়ার অনুভূতি আর মৃত্যুর অনুভূতি। মৃত্যুর অনুভূতি বিজ্ঞান-মহলে প্রচলিত নয়। তবে যদি পোড়ার কথা বলি, সেটা ব্রেইনে পৌঁছাবার আগেই আপনি মারা যাবেন—এটা সত্য। চেরনোবিল বিস্ফোরণে রিয়্যাক্টর কোরের কাছে থাকা পাম্প অপারেটর ভ্যালেরি খোদেমচুকের আস্ত শরীরখানাও এভাবেই ভ্যানিশ হয়ে যায়।
যদিও বিস্ফোরণের ১-২০ কিলোমিটারের মধ্যে যারা থাকবেন, তাদের তাৎক্ষণিক মৃত্যু হবে না। তবে রেডিয়েশনের দরুণ তাদের কোষ, কোষের ডিএনএ নষ্ট হতে থাকবে। এক পর্যায়ে ব্লাড ক্যানসার, থাইরয়েড ক্যানসার, ARS দেখা দেবে। ফলে কেউ ২-৩ দিনে, আবার কেউ ২-৩ বছর ভুগে মারা যাবেন। যদিও অনেকে বেঁচেও যান।
এটা কেবল লিটল বয়ের জন্য বললাম। এখনকার বেশিরভাগ নিউক্লিয়ার বোমা লিটল বয় (হিরোশিমা) ফ্যাট ম্যান (নাগাসাকি) বোমার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিধর।
রেডিয়েশন বার্নের মতো ফিজিক্যাল পেইনকে ‘মৃত্যুর অনুভূতি’ ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। যেখানে, মৃত্যুর অনুভূতির মতো আত্ম-চেতনা বিজ্ঞানে প্রমাণিত নয়।
লেখা: শাওন মাহমুদ, পদার্থবিজ্ঞান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
Leave a Reply