স্ত্রী ফারজানা খাতুনের দেওয়া কিডনিতে সুস্থ হয়ে বিদেশ থেকে নিজ এলাকায় ফিরেছেন যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআচড়া এলাকার ব্যবসায়ী এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাস (৫০)।
দীর্ঘ চার মাস তুরস্কে চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (২০ জুন) হেলিকপ্টর যোগে নিজ এলাকায় ফেরেন তিনি। ঢাকা থেকে তাদের বহনাকারী হেলিকপ্টর যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বাগআচড়া জনতা ইকোপার্ক মাঠে অবতরণ করে।
জানা যায়, আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসকদের মতে তার জীবনরক্ষার একমাত্র উপায় ছিল কিডনি প্রতিস্থাপন। স্বামীর জীবনের সংকটময় সময়ে তার স্ত্রী ফারজানা স্বামীকে বাঁচাতে নিজের কিডনি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর দেশে সকল প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর স্ত্রীকে নিয়ে আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাস তুরস্কে যান। সে দেশের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে সফলভাবে কিডনি প্রতিতস্থাপন সম্পন্ন হয়।
স্ত্রীর দেওয়া কিডনিতে সুস্থ হয়ে আব্দুল কুদ্দুস বিশ্বাসের ফেরার সংবাদ পেয়ে এলাকাবাসী যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বাগআচড়া জনতা ইকোপার্ক মাঠে অবস্থান নেয়। হাজার হাজার মানুষ তাদের স্বাগত জানাতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। কেউ ফুল দিয়ে আবার কেউবা মিষ্টি খাইয়ে স্বামী-স্ত্রীকে বরণ করে নেন।
এ বিষয় শার্শার সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি বলেন, এটা স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভালোবাসা-আত্মত্যাগ। একই সাথে মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ফারজানা কেবলমাত্র একজন স্ত্রী নন, একজন সাহসী নারী।
ফারজানা খাতুন বলেন, স্বামী যখন কিডনি রোগে আক্রান্ত হন, তখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি আমার নিজের কিডনি দিয়ে হলেও তাকে সুস্থ করে তুলবো। আমার একটাই কথা- স্বামী-স্ত্রী এক সাথে বাঁচবো। বাকিটা জীবন যেন আমরা এক সাথে হাসি আনন্দে কাটাতে পারি।
কুদ্দুস বিশ্বাস বলেন, আমার জীবনের সংকটময় মুহূর্তে আমার স্ত্রী তার নিজের কিডনি দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। আমি তার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। যে ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারবো না। আমার স্ত্রীর জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি যেন ভালোবাসা দিয়ে তার এই ত্যাগের প্রতিদান দিতে পারি।
Leave a Reply