ViralNews24

ViralNews24

চট্টগ্রামে হাসিনা কাদের কামালসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে নতুন মামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় ১১ মাস পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নগরের খুলশী থানায় ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ মামলাটি করেন।

মামলার বাদী সাইফুদ্দীন এমদাদ নিজেকে জুলাই মাসে চলা আন্দোলনের সময় আলিমের শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেছেন। তার গ্রামের বাড়ি সন্দ্বীপ উপজেলার কাচিয়াপাড়ায়। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, সরকারি প্রজ্ঞাপনের ২০২ নম্বরে তার নাম ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ আছে।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও এম মনজুর আলম, সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন ও বিজয় কিষাণ চৌধুরীর নামও আসামির তালিকায় রয়েছে।

মামলায় কয়েকজন শিল্পপতিকেও আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফী মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ও তার ছেলে আমির হোসেন সোহেল, ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও আকতার পারভেজ চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম ও তার মেয়ে রাইসা মাহবুব এবং জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল।

আসামির তালিকায় চারজন সাংবাদিকের নামও রয়েছে। তারা হলেন এ কুশে টেলিভিশনের সাবেক আবাসিক সম্পাদক রফিকুল বাহার, দৈনিক আ মাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ ও জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মো. মহিউদ্দিন এবং ডিবি সি টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান মাসুমুল হক। তবে মামলার এজাহারে তাদের সাংবাদিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়াও জাতীয় পার্টির নেতা সোলায়মান আলম শেঠকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিয়মিত সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে ১৫ জুলাই রাজু ভাস্কর্য এলাকায় তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের টার্গেটে পরিণত হন। ২৮ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের সাথে যোগাযোগ করে আন্দোলনে সহায়তা করেন। ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেটে আন্দোলনে অংশ নিলে সেখানে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আক্রমণে তিনি ‘গুলিবিদ্ধ’ ও ‘কোপজখম’ হন।

তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পাহারা দেওয়ায় তিনি হাসপাতালে যেতে পারেননি। পরে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসক, নার্স ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছ থেকে নিরাপদ স্থানে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। চিকিৎসকরা তার বুক ও ডান পায়ের ছররা গুলির কিছু অংশ বের করলেও বাকি গুলিগুলো রয়ে যায়। এমনকি তার ডান চোখের দৃষ্টি ফিরে আসেনি বলেও তিনি দাবি করেন।

খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতার হোসেন জানান, গত বছরের আগস্টে আন্দোলনের সময় হামলার শিকার এক যুবক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে ১৬৭ জনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *