ইরানের রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র এবং আবাসিক স্থাপনায় বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাতে চালানো ইসরায়েলের ভয়াবহ বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মৃত্যু ও ৩২০ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে হামলার প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে একটি নতুন তথ্য—এই হামলার সঙ্গে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাঠানো একটি আল্টিমেটাম চিঠির যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ট্রাম্পের চিঠি ও ‘৬০ দিনের সময়সীমা’
সিএনএন জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি-কে একটি ব্যক্তিগত চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে সমঝোতায় না এলে ‘সামরিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। চিঠিতে ইরানকে ৬০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।
এই চিঠির পরই এপ্রিলের ১২ তারিখ থেকে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ১২ জুন ছিল সেই আল্টিমেটামের শেষ দিন। ঠিক সেদিনই ইসরায়েল ইরানে ভয়াবহ হামলা চালায়। ফলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সময়মিল ও ঘটনার ধারা দেখে ট্রাম্পের আল্টিমেটাম ও ইসরায়েলের হামলার মধ্যে পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে।
ট্রাম্পের সতর্কবার্তা: ‘আজ ৬১তম দিন’
শুক্রবার (১৩ জুন) সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার কথা ইরানের শোনা উচিত ছিল। আমি তাদের ৬০ দিনের সতর্কবার্তা দিয়েছিলাম এবং আজ ৬১তম দিন।’
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি চিঠিতে খামেনিকে লিখেছিলেন, ‘আপনারা হয় সমঝোতায় আসুন, না হলে সামরিক পন্থা নিতে হবে। আমি চাই না ইরান আঘাত পাক। ইরানিরা চমৎকার মানুষ। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে তার ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে।’
ট্রুথ সোশ্যালে হুঁশিয়ারি
শুক্রবার (১৩ জুন) ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প আবারও ইরানকে সতর্ক করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ইরানে অনেক মৃত্যু ও ধ্বংস হয়েছে। পরবর্তী হামলাগুলো হবে আরও ভয়াবহ, যা সব কিছু শেষ করে দেবে। তবে এখনো সময় আছে—এই ধ্বংস থামানোর।’
‘ইরানকে অবশ্যই সমঝোতায় আসতে হবে এবং তা সব শেষ হওয়ার আগেই। আর কোনো মৃত্যু নয়, আর কোনো ধ্বংস নয়। ঈশ্বর আপনাদের সবাইকে আশীর্বাদ করুন’ যোগ করেন তিনি।
সূত্র: সিএনএন, আলজাজিরা
Leave a Reply