ViralNews24

ViralNews24

এই নারীর হাত দিয়ে ১৮০টিরও বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে

শুকিয়ে শীর্ণ হওয়া নদীপথেই অ্যামাজনের গহীন জঙ্গলের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যসেবা নেওয়ার জন্য পৌঁছাতে হয় কাছের কোনো হাসপাতালে। টেফের কাছে সোলিমোস নদীর শুকিয়ে শীর্ণ হওয়া দৃশ্যই বলে দেয় একজন গর্ভবতী নারীর জন্য সেই যাত্রা কতটা কঠিন হতে পারে। সৌভাগ্যবশত জঙ্গলে তাবিতা দস সান্তোস মোরায়েসের মতো ধাত্রীরা আছেন। ৫১ বছর বয়সি এই নারীর হাত দিয়ে ১৮০টিরও বেশি শিশুর জন্ম হয়েছে।

অ্যামাজন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা সান্দ্রা কাভালকান্তেরও প্রশ্ন— কী করে এমন গহীন বনে বসবাসরতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যেতে পারে। তবে ধাত্রীরা থাকায় তিনি কিছুটা নির্ভার। বলেন, ‘‘যেখানে ধাত্রীরা রয়েছেন সেখানে শিশুরা অন্তত মারা যাবে না।’’

দস সন্তোস মোরায়েস প্রায়ই তার নৌকা নিয়ে বের হন। নদী যখন পানিতে ভারপুর ছিল তখন তার এলাকার কাছের হাসপাতালটিতে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা লাগতো। আর গত দুই বছরের রেকর্ড খরার পর এখন একদিনেরও বেশি সময় লেগে যায়।

২২ বছর বয়সী মেলিয়ানে নিজের অনাগত সন্তানের জন্ম দিতে চেয়েছিলেন হাসপাতালে যাতে বিপদ এড়ানো যায়। কিন্তু অর্থ আর যাত্রা এই দুয়ের কথা চিন্তা করে সেই ভাবনা বাদ দিতে হয়েছে তাকে। সেজন্য তাবিতাই এখন তার ভরসা।

যাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ আছে তারা বেতন, ভাতা বা টাকা পেয়ে থাকেন। কিন্তু তাবিতার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ তাবিতা দক্ষতার সঙ্গে কাজটি করলেও কোনো বেতন পান না। সামান্য ভাতা পেয়ে থাকেন। যা ওই দেশের ন্যূনতম মজুরির চেয়ে কম।

তাবিতা স্থানীয় ঐতিহ্যগত এই জ্ঞান নিজের মেয়েকে শিখিয়ে যেতে চান। তাবিতার ইচ্ছা, নিজের মেয়েও এই শিক্ষা পাক। কারণ তিনি নিজেও মায়ের কাছ থেকেই শিক্ষা নিয়েছিলেন। বর্তমান প্রজন্ম এই কাজ শিখতে আগ্রহী নয়। তাই পুরোনো ধাত্রীদের চাহিদা বেড়েই চলেছে। কিন্তু তাবিতার বয়স বাড়ছে তার জন্য এই কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তাবিতার ১৪ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়েন তাকে ঘরের কাজে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি মায়ের কাজ শেখারও চেষ্টা করে। মারিয়েন বলেন, ‘‘ আমি মাকে নিয়ে গর্বিত। আমি তার উদাহরণ অনুসরণ করতে চাই।’’

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *