ইরান ও ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সরিয়ে আনতে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে তাদের তেহরান থেকে স্থলপথে ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে নেওয়া হবে। পরে সেখান থেকে পাকিস্তানের করাচি হয়ে আকাশপথে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
বুধবার (১৮ জন) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির মধ্যে ১০০ জনের মতো ইতিমধ্যে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন ইতোমধ্যে তেহরান ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পৌঁছেছেন। দূতাবাসের ৪০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে সব বাংলাদেশিকে এক জায়গায় এনে আবাসনের ব্যবস্থা করা কঠিন। তাই অনেকেই দলবদ্ধভাবে নিজের উদ্যোগে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছেন। দূতাবাস তাদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।”
ইরানে চলমান সংঘাত এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে সেখানকার আর্থিক লেনদেনেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “ইরানের সীমান্তবর্তী একাধিক দেশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাড়তি তহবিল নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।”
তেহরান থেকে ফিরতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের সংখ্যা প্রায় ২০০ বলে জানিয়েছে তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। তাদের ফিরিয়ে আনতে কয়েক দিনের মধ্যেই অভিযান শুরু হতে পারে।
এক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, “ইরানের রাজধানী তেহরান অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনা হবে। তবে এই মুহূর্তে দূতাবাস চালু রয়েছে এবং নাগরিকদের সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইরানে বর্তমানে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ হতাহত হননি। তবে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় বাংলাদেশ সরকার সময়মতো ব্যবস্থা নিতে বদ্ধপরিকর।
Leave a Reply