ViralNews24

ViralNews24

ইরানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের রহস্য উদঘাটন

ইরানের উত্তরে শুক্রবার (২০ জুন) শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ইরান গোপনে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর কারণে ভূমিকম্প হয়েছে কি না, এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভূকম্পবিদরা এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তারা ভূমিকম্পটির প্রাকৃতিক উৎস সম্পর্কে পরিষ্কার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ তুলে ধরেন।

আজ শনিবার (২১ জুন) সংবাদমাধ্যম শাফাক নিউজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.০-এর বেশি এবং এটি ১০ কিলোমিটার গভীরতায় আলবোর্জ পর্বতমালায় আঘাত হানে।

সুমের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূকম্পবিদ্যার অধ্যাপক ড. আলি রামথান বলেন, এই ভূমিকম্প অঞ্চলের অতীতের ভূ-তাত্ত্বিক গতিবিধির সঙ্গে মিল রেখে ঘটেছে। এটি ছিল একটি ‘ক্লাসিক রিভার্স ফল্ট’ ভূমিকম্প; যা বিশ্বজুড়ে ১৪৯টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে রেকর্ড করা হয়েছে। এই গভীরতায় কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো সম্ভব নয়—এটা ভূ-ভৌতভাবে অসম্ভব।’

তিনি জানান, ভূমিকম্পের তরঙ্গগুলোর প্রাথমিক ও গৌণ ঢেউয়ের ধরন স্পষ্টভাবে প্রাকৃতিক উৎসের সঙ্গে মিলে যায়, যা টেকটোনিক গতিবিধির বৈশিষ্ট্য বহন করে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাসহ (ইউএসজিএস) আন্তর্জাতিক ভূকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোও ভূমিকম্পটির প্রাকৃতিক চরিত্র নিশ্চিত করেছে।

গোপন পারমাণবিক বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন রামথান। সতর্ক করেন, সক্রিয় ফল্ট লাইনের কাছাকাছি এমন পরীক্ষা চালানো হলে তা বিপর্যয়কর ভূমিকম্প ঘটাতে পারে—যা সব পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রই এড়িয়ে চলে।

তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক পরীক্ষাজনিত ভূমিকম্পগুলো সাধারণত অগভীর এবং খুব কমই ৩.০ মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এই ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫.০-এর বেশি, যার জন্য কয়েক মিলিয়ন টন টিএনটির সমপরিমাণ শক্তির প্রয়োজন—যেটা বর্তমান কোনো পারমাণবিক ক্ষমতার আওতার বাইরে।’

তিনি এই গুজবকে ‘বৈজ্ঞানিক অজ্ঞতা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে আখ্যা দেন এবং নিশ্চিত করেন যে ভূমিকম্পটি ছিল সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক।

আলবোর্জ পর্বতমালা, যা কাস্পিয়ান সাগর ও ইরানের কেন্দ্রীয় মালভূমির মাঝে অবস্থিত, দেশটির সবচেয়ে ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলোর একটি এবং সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এখানে একাধিক বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *